দৌড়ানো আমার শখের মধ্যে একটা, আর ভালো রানিং শু (running shoe) না হলে দৌড়ে শান্তি পাওয়া যায় না, এটা আমি নিজে অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। পায়ের আরাম, সাপোর্ট আর পারফরম্যান্সের কথা মাথায় রেখে জুতো বাছাই করাটা খুব জরুরি। এখন বাজারে এত অপশন যে কোনটা ছেড়ে কোনটা নেব, সেটাই একটা সমস্যা।আমি নিজে অনেকগুলো রানিং শু ব্যবহার করে দেখেছি, তাই কোন জুতোটা কেমন, সেটা নিয়ে একটা ধারণা দিতে পারব। ২০২৩-এ রানিং শুয়ের বাজারে নতুন কী এসেছে, কোন টেকনোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে, আর কোন ব্র্যান্ডগুলো ভালো করছে, সেই সব কিছু নিয়েই আলোচনা করব।আসুন, এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক!
দৌড়ানোর জন্য সেরা জুতো: আরাম ও পারফরম্যান্সের সঠিক মেলবন্ধন

দৌড়ানো শুধু একটা ব্যায়াম নয়, এটা একটা অভ্যাস। আর এই অভ্যাসে যদি সঠিক জুতো না থাকে, তাহলে মুশকিল। আমি নিজে দেখেছি, ভুল জুতো বেছে নিলে পায়ে ফোস্কা পড়ে, হাঁটুতে ব্যথা হয়, এমনকি কোমরেও সমস্যা হতে পারে। তাই দৌড়ানোর জন্য জুতো কেনার আগে কিছু জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়।
দৌড়ানোর জুতোর প্রকারভেদ
* রাস্তার জন্য জুতো: এই জুতো গুলো সাধারণত শক্ত পিচের রাস্তার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়। এদের সোল গুলো বেশ টেকসই হয়।
* ট্রেইল রানিং জুতো: যারা পাহাড়ি পথে বা জঙ্গলে দৌড়াতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই জুতো। এদের গ্রিপ খুব ভালো হয়, ফলে পিছলে যাওয়ার ভয় কম থাকে।
* ট্র্যাক এবং ফিল্ড স্পাইক: এই জুতো গুলো সাধারণত কোনো খেলার জন্য ব্যবহার করা হয়। যেমন স্প্রিন্ট বা লং জাম্প।
জুতো কেনার সময় কী দেখবেন
* সাপোর্ট: আপনার পায়ের арч কেমন, সেটার ওপর নির্ভর করে জুতো বাছতে হবে। যাদের ফ্ল্যাট ফিট, তাদের জন্য আলাদা সাপোর্ট দরকার।
* কুশনিং: রাস্তায় দৌড়ানোর সময় পায়ের ওপর অনেক চাপ পড়ে। তাই ভালো কুশনিং (Cushioning) দরকার।
* ফিট: জুতো যেন খুব টাইট বা খুব ঢিলে না হয়। বুড়ো আঙুলের সামনে সামান্য জায়গা থাকা উচিত।
সেরা ব্র্যান্ড এবং তাদের জনপ্রিয় মডেল
বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের রানিং শু পাওয়া যায়, কিন্তু সবগুলোর মান সমান নয়। কিছু ব্র্যান্ড আছে যারা বছরের পর বছর ধরে ভালো জুতো তৈরি করে আসছে। তাদের কয়েকটা জনপ্রিয় মডেল নিয়ে আলোচনা করা যাক।
Asics: GEL-Kayano এবং GT-2000
* Asics GEL-Kayano: এই জুতোটা তাদের জন্য যারা অতিরিক্ত সাপোর্ট খোঁজেন। যাদের পায়ের арч (arch) খুব বেশি বাঁকানো, তাদের জন্য এটা খুব ভালো।
* Asics GT-2000: এটা Kayano-র থেকে একটু হালকা এবং কম সাপোর্টিভ। মাঝারি арч-এর জন্য এটা ভালো।
Brooks: Ghost এবং Adrenaline GTS
* Brooks Ghost: এটা খুব জনপ্রিয় একটা জুতো। এর কুশনিং খুব ভালো এবং এটা প্রায় সব ধরনের দৌড়ানোর জন্য উপযুক্ত।
* Brooks Adrenaline GTS: যাদের একটু বেশি সাপোর্ট দরকার, তাদের জন্য এটা ভালো। এটা হাঁটু এবং গোড়ালিকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়।
Nike: Air Zoom Pegasus এবং React Infinity Run
* Nike Air Zoom Pegasus: এটা একটা ক্লাসিক জুতো। বহু বছর ধরে এটা দৌড়বিদদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। এর দামও তুলনামূলকভাবে কম।
* Nike React Infinity Run: এই জুতোটা তাদের জন্য যারা কুশনিংয়ের (Cushioning) ওপর বেশি জোর দেন। এটা পায়ের ওপর চাপ কমায় এবং চোট লাগার সম্ভাবনাও কমায়।
নতুন টেকনোলজি: যা আপনার জানা দরকার
রানিং শুয়ের (running shoe) জগতে প্রতি বছরই নতুন নতুন টেকনোলজি আসছে। এই টেকনোলজিগুলো জুতোকে আরও আরামদায়ক, হালকা এবং দ্রুতগতির করে তোলে।
3D প্রিন্টিং
* কিছু কোম্পানি এখন 3D প্রিন্টিং ব্যবহার করে কাস্টমাইজড (customized) সোল তৈরি করছে। এর ফলে আপনার পায়ের মাপ অনুযায়ী জুতো তৈরি করা সম্ভব।
কার্বন ফাইবার প্লেট
* এই প্লেটগুলো জুতোর সোলের মধ্যে দেওয়া থাকে। এটা দৌড়ানোর সময় অতিরিক্ত স্পীড দেয় এবং পায়ের শক্তি খরচ কমায়।
স্মার্ট সেন্সর
* কিছু জুতোয় স্মার্ট সেন্সর লাগানো থাকে, যা আপনার দৌড়ানোর ডেটা (data) ট্র্যাক করে। যেমন আপনার গতি, কত ক্যালোরি (calorie) খরচ হল, ইত্যাদি।
কীভাবে নিজের জন্য সঠিক জুতো খুঁজে বের করবেন?
নিজের জন্য সঠিক জুতো খুঁজে বের করাটা একটা কঠিন কাজ। কিন্তু কিছু জিনিস মাথায় রাখলে এটা সহজ হয়ে যায়।
পায়ের মাপ
* প্রথমে নিজের পায়ের মাপ ভালো করে জানুন। দোকানে গিয়ে ফুট স্ক্যানার (foot scanner) দিয়ে মাপতে পারেন।
দৌড়ানোর ধরন
* আপনি কেমন জায়গায় দৌড়ান, সেটার ওপর নির্ভর করে জুতো বাছুন। রাস্তায় দৌড়ালে अलग জুতো, আর পাহাড়ে দৌড়ালে अलग।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
* জুতো কেনার আগে কোনো স্পোর্টস শপের (sports shop) কর্মীর সঙ্গে কথা বলুন। তারা আপনাকে সঠিক জুতো বেছে নিতে সাহায্য করতে পারবে।
| বৈশিষ্ট্য | Asics GEL-Kayano | Brooks Ghost | Nike Air Zoom Pegasus |
|---|---|---|---|
| সাপোর্ট | অতিরিক্ত সাপোর্ট | মাঝারি সাপোর্ট | স্বাভাবিক সাপোর্ট |
| কুশনিং | জেল কুশনিং | DNA LOFT কুশনিং | এয়ার জুম কুশনিং |
| ব্যবহার | দীর্ঘ দৌড় এবং অতিরিক্ত সাপোর্টের জন্য | দৈনিক দৌড় এবং আরামের জন্য | গতি এবং বহুমুখী ব্যবহারের জন্য |
জুতোর যত্ন কিভাবে নেবেন?
ভালো জুতো কিনলেই তো হল না, তার যত্নও নিতে হয়। নিয়মিত যত্ন নিলে জুতো অনেক দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
নিয়মিত পরিষ্কার করুন
* দৌড়ানোর পর জুতোতে ধুলো-বালি লাগতে পারে। তাই হালকা ব্রাশ (brush) দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন।
রোদে শুকাবেন না
* জুতো রোদে শুকালে এর মেটেরিয়াল (material) খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই ছায়ায় বা হাওয়ায় শুকানো ভালো।
জুতো ঘুরিয়ে পড়ুন
* একই জুতো রোজ না পরে, দুই-তিন জোড়া জুতো ঘুরিয়ে পরলে জুতোর ওপর চাপ কম পড়ে এবং তারা বেশি দিন টেকে।আশা করি, এই গাইডটা (guide) আপনাকে ২০২৩ সালের সেরা রানিং শু (running shoe) বেছে নিতে সাহায্য করবে। নিজের জন্য সঠিক জুতো খুঁজে বের করুন আর দৌড়ানোর আনন্দ উপভোগ করুন!
লেখাটি শেষ করার আগে
আশা করি, এই ব্লগ পোস্টটি আপনাকে সঠিক রানিং শু (running shoe) খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। দৌড়ানো শুরু করার আগে ভালো করে জেনে বুঝে নিজের জন্য সেরা জুতোটি বেছে নিন। তাহলে দৌড়ানোর পথ হবে আরও আরামদায়ক এবং আনন্দময়। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন!
দরকারী কিছু তথ্য
১. পায়ের মাপ নেওয়ার জন্য সব সময় বিকেলে যান, কারণ দিনের শেষে পা সামান্য ফুলে যায়।
২. মোজা পরে জুতো কিনুন, যে মোজা পরে আপনি দৌড়াবেন।
৩. দোকানে গিয়ে কিছুক্ষণ হেঁটে বা হালকা দৌড়ে দেখুন জুতো পরে।
৪. পুরনো জুতোর সোল (sole) দেখে বুঝতে পারবেন আপনার পায়ের কোথায় বেশি চাপ পড়ে।
৫. প্রতি ৫০০-৮০০ কিলোমিটার দৌড়ানোর পর জুতো বদলানো উচিত।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
সঠিক জুতো বেছে নিলে দৌড়ানোর সময় চোট লাগার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই, নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী জুতো বাছা খুব জরুরি। ভালো ব্র্যান্ডের জুতো একটু দামি হলেও, এগুলো পায়ের জন্য অনেক ভালো সাপোর্ট দেয় এবং দীর্ঘ দিন টেকে। তাই বিনিয়োগ করার আগে একটু রিসার্চ করে নেবেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: ভালো রানিং শু (running shoe) কেনার সময় কোন বিষয়গুলো দেখতে হয়?
উ: ভালো রানিং শু কেনার সময় কয়েকটা জিনিস খুব জরুরি। প্রথমত, আপনার পায়ের মাপ যেন ঠিক থাকে, জুতোটা যেন খুব টাইট বা ঢিলে না হয়। দ্বিতীয়ত, দেখতে হবে জুতোটা আপনার পায়ের আর্চকে (arch) সাপোর্ট করছে কিনা। আর তৃতীয়ত, জুতোটা হালকা होना चाहिए, যাতে দৌড়ানোর সময় কোনো অসুবিধা না হয়। আমি নিজে যখন জুতো কিনি, তখন এই জিনিসগুলো খুব ভালো করে দেখি।
প্র: ২০২৩ সালের সেরা কয়েকটি রানিং শু (running shoe) ব্র্যান্ড (brand) কী কী?
উ: ২০২৩ সালে অনেকগুলো ব্র্যান্ড খুব ভালো রানিং শু বানাচ্ছে। Nike, Adidas, ASICS – এই ব্র্যান্ডগুলো তো আছেই, এছাড়াও Hoka One One আর Brooks-ও খুব ভালো করছে। আমি কিছুদিন আগে Hoka-র একটা জুতো কিনেছিলাম, সত্যি বলতে, দৌড়ানোর সময় খুব আরাম পাই।
প্র: রানিং শু (running shoe) কতদিন পর পর বদলানো উচিত?
উ: রানিং শু কতদিন টিকবে, সেটা নির্ভর করে আপনি কতটা দৌড়ান আর জুতোর কোয়ালিটি (quality) কেমন তার ওপর। তবে সাধারণত, ৩০০-৫০০ মাইল দৌড়ানোর পর জুতো बदलানো উচিত। আমি সাধারণত বছরে একবার জুতো পাল্টাই, কারণ আমি প্রায় প্রতিদিনই দৌড়াই।
📚 তথ্যসূত্র
Wikipedia Encyclopedia
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과






